নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

দৃষ্টিকোণ

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২১

আমরা সবাই প্রতিদিন রাতে সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখি। আগামীকাল আমাদের এমন হবে, ভবিষ্যৎ আমাদের এমন হবে। অতঃপর ঘুম থেকে উঠে আমরা সবাই সেই স্বপ্ন পূরণ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করি নানাভাবে। "অনেকের স্বপ্ন পরিবেশের প্রতিকূলতার কারণে পূরণ হয় না, কিছু মানুষের হয় (কিছু ব্যতিক্রমী থাকবে এটা স্বাভাবিক)।" অনেকের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার কারণে হিম্মৎ টুটে যায় (শক্তি, উচ্ছ্বাস হারিয়ে যায়)। তবু বেঁচে থাকার তাগিদে পুনরায় স্বপ্ন দেখি এবং তা বাস্তবতায় রুপান্তর করার জন্য পুনরায় ছুটে চলি। 

দৃষ্টিকোণ

কিন্তু আমরা সহজ একটি সত্য বোঝার ও দেখার দৃষ্টিকোণ হারিয়ে, স্বপ্ন দেখেই যাচ্ছি। ফলে আমাদের স্বপ্নগুলো অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে। 

আমরা মানুষ আর আমাদের প্রত্যেকের একটি পরিবার সহ সামাজিক অবস্থান রয়েছে। যে পরিবার বা সমাজের থেকে ভিন্ন হতে আমরা কখনো পারব না। কারণ আমরা একা একলা বেঁচে থাকতে পারি না। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন হয় পরিজনের। এখন আমরা যদি স্বপ্ন দেখি শুধু একান্ত জীবনকে ঘিরে তা হলে তা তো ব্যর্থ হবেই। 

আপনার বসবাসকৃত সমাজের দুর্দশা নিয়ে আপনাকে অবশ্যই ভাবতে হবে এবং আপনার স্বপ্নে অবশ্যই সমাজের সমৃদ্ধির চেতনা থাকতে হবে। যদি তা না থাকে, তা হলে আপনার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ হবে না, অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। কারণ আপনি যে স্বপ্ন দেখে থাকেন তা এই সমাজের সাথে জড়িত অর্থাৎ সম্পর্কিত। আর তাই আপনাকে এই সমাজের অবস্থা বিবেচনা করতে হবে এবং সমাজের অন্যায় দূর করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজকে  উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে।

দ্বিতীয় ভাগ

জীবনের স্বপ্নগুলো সত্যি হবে এই আশায় বেঁচে আছি আমরা। তার জন্য কঠিন পরিশ্রম করছি দিনরাত, শুধু জীবনের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে। দিন যায় মাস যায় বছর ফুরায় স্বপ্ন কল্পনার জগতে বৃদ্ধ হতে থাকে। দু’একজনের সত্যি হচ্ছে তাও মিথ্যা নয় কিন্তু সে দু’একজনের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পিছনে ত্যাগের সীমাটাও অপার।

মূল কথা হচ্ছে পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ স্বপ্ন সাজায় ভবিষ্যতকে ঘিরে এবং তা সত্যি হবে একদিন এই আশায় জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ করে পরিশ্রম করে যাচ্ছে! "কিন্তু আমাদের স্বপ্নগুলো একক শুধু নিজের পরিবার নিয়ে, সমাজ, দেশ, পৃথিবীর উন্নতি নিয়ে না।" ফলে আমাদের যেটুকু অগ্রগতি হচ্ছে তার থেকে বেশি দূর্গতি হচ্ছে সমাজ থেকে আলাদাভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গিয়ে। আমরা একটা সত্য ভুলেই গেছি যে, আমরা একটা সমাজে বসবাস করি এবং আমাদের সাথে জড়িত প্রত্যেকটি বিষয়বস্তু সমাজের সাথে জড়িত। 

আমাদের স্বপ্ন দেখার জগতে কোনো প্রহরী নেই, ফলে আমরা নিজের মত করে স্বপ্ন দেখি। কিন্তু বাস্তবতায় আমাদের সীমাবদ্ধ আছে, ফলে আমাদের স্বপ্নগুলো আছড়ে পড়ছে। এখন কথা হলো এই বাস্তবতা উপেক্ষা করে আমরা ইতিপূর্বে কখনো চলতে পারিনি আর না কখনো পারব। "কারণ আমরা একা একলা থাকতে বেশিক্ষণ পারি না।" 

আমাদের দেহ যেরূপে প্রকৃতির আলো বাতাস ও আহার বিহীন অচল, সেরূপে আমাদের আত্মা অপরের স্নেহ ভালোবাসা ছাড়া বোধহীন হয়ে পড়ে। "সামান্য আনন্দ যেভাবে আমাদের অগাধ দুঃখ কষ্ট'কে ভুলিয়ে দেয়, সেভাবে সামান্য অবহেলাও আমাদেরকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। আর সুখ দুঃখ এ দু’টোই অনুভব করে থাকে আমাদের আত্মা দেহ নয়।

এজন্য আমরা এই সমাজ থেকে পৃথক হয়ে যা কিছুই করতে চাই না কেনো, তা করতে কোনদিন সফল হবো না। কারণ এই সমাজ আমাাদের দেহের মত। আমাদের দেহের একাংশে আঘাত লাগলে যেভাবে আমরা ব্যথিত হই, সেভাবে সমাজের অবস্থা খারাপ থাকলে আমরা আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে কোনদিনই পারব না।