একদিন টের পাইলাম, আমার মারাত্মক কষ্ট হইতেছে কিন্তু আমার চোখ দিয়ে এক ফোঁটাও অশ্রু গড়ায়ে পড়তেছে না। আয়নাতে নিজের চেহারা দেখলাম, খুব স্বাভাবিক চেহারা, সেখানে কোন কষ্টের ছাপ নাই। অথচ আমার বুকের ভেতরটা তীব্র কষ্টে ছারখার হয়ে যাইতেছে।
পৃথিবীর মানুষ ভাবে, আমার কখনো কষ্ট হয় না। কারণ আমার চোখ টলমল করে না, আমার কন্ঠ ভারী হয়ে আসে না, আমার কান্না পায় না। এইসব বুকের ভেতরের কষ্ট তো খালি চোখে দেখা যায় না, বুঝা যায় না, অমন একটা অতসী কাচও নাই যা দিয়ে কষ্ট দেখা যায়।
Image: Jens Mohr |
এই জগতে কান্নাকে দুর্বলতা হিসেবে ভেবে নেয়া হয়। যারা কাঁদে, তারা নাকি ভঙ্গুর। যেদিন থেকে তীব্র কষ্টেও আর কাঁদতে পারলাম না, ঐদিন টের পাইলাম, যাদের কান্না আসে - তারা আসলে প্রচণ্ড ভাগ্যবান।
অনেকে আবার বলে, বড় হয়ে গেলে নাকি কাঁদা যায় না। বড় হয়ে গেলে জীবন থেকে কষ্টরা সব নিখোঁজ হয়ে যায় নাকি? ঐ যে তিন বছরের বাচ্চার খেলনা হারানোর কষ্ট আর আমার প্রিয় মানুষ হারানোর কষ্ট - দুইটাই তো বুকের ভেতরে তীব্রভাবে আঘাত করে। এক আঘাত প্রকাশ করা যাবে, আরেক আঘাত প্রকাশ করা যাবে না - এ কেমন নিয়ম?
নিজের ভেতরের একটা অনুভূতি কোনভাবেই প্রকাশ করতে না পারাটা কতটা অসহায় একটা ব্যাপার, কারে বুঝাই? কারো কাছে আমি 'পাথর', কারো কাছে আমি 'শক্ত', কারো কাছে আমার হৃদয় অনেক শীতল আর আমার কাছে আমি ভীষণ অসহায়। বয়সের শিকল আর ম্যাচিউরিটির হাতকড়াতে বন্দী থেকে আমি নিজের ভেতরে প্রতিনিয়ত একটা মৃত নদী পুষতে থাকি, সেই নদীর অস্তিত্ব কেউ জানে না।
মন্তব্য করুন এখানে