নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

অন্যায়ের বিরুদ্ধে গলা ফাটানোর আগে

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২১
অন্যায়ের বিরুদ্ধে গলা ফাটানোর আগে

যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে গলা ফাটানোর আগে একটু খতিয়ে দেখা দরকার- অন্যায়টা আসলে কী ধরনের? ব্যক্তির অন্যায়? নাকি সিস্টেমের অন্যায়? ব্যাখ্যা করে বলছি। 

ধরুন, কোনো সমাজে অনেক চুরির ঘটনা ঘটছে। এই চুরিটা দুই কারণে হতে পারে। মানুষের নৈতিক অধঃপতনের কারণে চুরি, অথবা অর্থনৈতিক জুলুম বঞ্চনার কারণে ক্ষুধার তাড়নায় চুরি। দু’টোই চুরি, কিন্তু একটির জন্য দায়ী ব্যক্তি, আরেকটির জন্য দায়ী রাষ্ট্রব্যবস্থা। 

রাষ্ট্রব্যবস্থা যদি ন্যায়ের ধারক হয় তাহলে ব্যক্তিগত অন্যায় ও অপরাধ খুব সহজেই নির্মূল করা যায়। কাউকে রাজপথে বিক্ষোভ-মিছিল-প্রতিবাদ-প্রতিরোধ-ফাঁসি চাই-জেল চাই ইত্যাদির দরকার পড়ে না। কিন্তু অন্যায়টা যদি সিস্টেমের হয়- তাহলে বিশাল সমস্যা। সিস্টেমের মধ্যে যখন অন্যায় ঢুকে যায়, তখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা মানে পুরো সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই করা। সেটা সবার দ্বারা সম্ভব নয়। তার জন্য আদর্শ লাগে, নেতৃত্ব লাগে, সংগঠন লাগে। আর যাই হোক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে সিস্টেম পাল্টানো যায় না। 

আমাদের জনগণের সমস্যা হলো, তারা অন্যায়ের নেপথ্যে থাকা সিস্টেমকে দেখতে পায় না, যেহেতু সিস্টেমটা কোনো না কোনো ব্যক্তিই পরিচালনা করে তাই অনেকে সেই ব্যক্তিকেই নাটের গুরু মনে করতে থাকে। ফলে তারা ব্যক্তিবিশেষকেই টার্গেট করে গালাগালি, সমালোচনা ইত্যাদি আরম্ভ করে এবং বলা বাহুল্য, অনেক বড় ভুল করে ফেলে। সমস্যা সমাধানের রাস্তাটাই হারিয়ে ফেলে।

তাই কে কতবড় বিক্ষোভ মিছিল বের করলেন, কে কতগুলো ফেসবুক স্ট্যাটাস দিলেন, কে কার মুখোশ খুলে দিলেন, কে কার বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিলেন- এসব দেখে খুব আশাবাদী না হওয়াই ভালো। আশাবাদী হবেন কেবল তখন, যখন দেখবেন কেউ ব্যক্তিবিশেষ নিয়ে পড়ে নেই বরং পুরো সিস্টেম নিয়ে কথা বলছে, পুরো সিস্টেমের অন্যায়গুলো ধরিয়ে দিচ্ছে। তারাই আপনাকে ন্যায়ের সন্ধান দিতে পারবে, তারাই আপনার প্রকৃত বন্ধু। কাজেই তাদের পাশে দাঁড়ান।