নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

কালো তালিকা ও হেযবুত তওহীদ

প্রকাশিত: মে ২০, ২০২১
কালো তালিকা ও হেযবুত তওহীদ

গুগলে হেযবুত তওহীদ লিখে সার্চ দিলে প্রথমেই আসে উইকিপিডিয়ার “হেযবুত তওহীদ” নামের পেজটি। সেখানে হেযবুত তওহীদের জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমের কোনো তথ্য না থাকলেও বড় বড় করে লেখা আছে- হেযবুত তওহীদ কালো তালিকাভুক্ত

ব্যস- এতটুকু দেখেই অনেকে হেযবুত তওহীদকে ভুল বুঝে বসে থাকেন। সামনে আর এক ধাপও পা বাড়ান না। আমরা যে লক্ষ লক্ষ সভা-সমাবেশ, র‌্যালি, মানবন্ধন, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী করলাম এবং মানুষকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করলাম সেই তথ্য আর জানা হয়ে ওঠে না। পত্রিকার মাধ্যমে, বই পুস্তকের মাধ্যমে, অনলাইনে ভিডিও বক্তব্যের মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে ইসলামের অসাম্প্রদায়িক, উদার, নারীবান্ধব, সহনশীল, পরমতসহিষ্ণু আদর্শ পৌঁছে দিচ্ছি, সেই তথ্যও তাদের জানা হয়ে ওঠে না। তারা একটা “কালো তালিকা” নামক জুজুর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতেই দূরে সরে পড়েন। কাজেই এই কালো তালিকার বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার করে দেওয়া দরকার হয়ে পড়েছে।

কালো তালিকা” কোনো আইনী পরিভাষা নয়। আমরা কালো তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালত পর্যন্ত গিয়েছিলাম, আদালত স্পষ্টভাবে বলেছে কালো তালিকা বলে আইনে কিছু নাই। বস্তুত কালো তালিকা জিনিসটা মিডিয়ার সৃষ্টি। মিডিয়া এটাকে বিরাট কিছু বানিয়ে প্রচার করতে চায়। যারা কালো তালিকার অর্থ বোঝেন না, তারা মনে করেন-  না জানি কত বড় অপরাধী সংগঠনের কথা বলা হচ্ছে। অথচ কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য কাউকে কোনো অপরাধের সাথে জড়িত হওয়াও লাগে না, কেবল প্রশাসনের সন্দেহ হওয়াই যথেষ্ট! প্রশাসন যে কাউকে সন্দেহ করতে পারে। আপনি যত ভালো নাগরিকই হোন, আপনিও যে কোনো কারণে প্রশাসনের সন্দেহের মধ্যে থাকতে পারেন। আমাদের উপর প্রশাসনের সন্দেহের কারণটা কী ছিল জানেন? আমাদের আন্দোলনের নাম। হাস্যকর হলেও এটাই সত্য! 

২০০৯ সালে হিজবুত তাহরীর নামের যে দলটাকে সরকার নিষিদ্ধ করেছিল, তাদের নামের সাথে আমাদের নামের আংশিক মিলের কারণে আমাদেরকেও প্রশাসন সন্দেহ করতে থাকে। যদিও হিজবুত তাহরীরের আদর্শ আর হেযবুত তওহীদের আদর্শের মধ্যে তফাৎ হলো আকাশ-পাতাল, কিন্তু তাতে কী? প্রশাসনের সন্দেহ হয়েছে, কাজেই আমাদের কিছুই বলার নেই। সেই সন্দেহ থেকেই কালো তালিকাভুক্ত করা হয় হেযবুত তওহীদকে। তারপর শুরু হয় নজরদারি ও গোপনে-প্রকাশ্যে ব্যাপক তদন্ত। 

তদন্তের বিষয়ে একটি কথা সবার জেনে রাখা দরকার যে, হেযবুত তওহীদকে ব্যাপকভাবে তদন্ত করা হোক এটা হেযবুত তওহীদেরই দাবি ছিল। হেযবুত তওহীদের এমাম সরকারের কাছে চিঠি দিয়ে এই পর্যন্ত বলেছিলেন যে, প্রশাসনের কাউকে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিন, তিনি আমাদের সাথে থাকবেন, খাবেন, চলাফেরা করবেন আর আমরা সারাদিন কী কী করি নিজের চোখেই দেখবেন। আমাদের কোনো কথায় বা কাজে আপত্তিকর কিছু পেলে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করবেন। প্রশাসন তেমন কাউকে পাঠায়নি।

২০০৯ সালে হেযবুত তওহীদকে কালো তালিকাভুক্ত করার পর আজ এক যুগ পেরিয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সময়ে হাজার হাজার তদন্ত হয়েছে, পর্যবেক্ষণ হয়েছে, নজরদারি হয়েছে। কিন্তু হেযবুত তওহীদের কার্যক্রম থেকে দেশবিরোধী বা ইসলামবিরোধী কিছুই পায়নি সরকার। বরং হেযবুত তওহীদের অনুষ্ঠানগুলোতে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা উপস্থিত থেকে সরাসরি আমাদের বক্তব্য শুনেছেন ও বাহবা দিয়েছেন। এরপরও কালো তালিকাভুক্তির বিষয়টার কোনো প্রাসঙ্গিকতা থাকে কিনা সেই বিবেচনার ভার পাঠকদের উপরই ছেড়ে দিলাম। 

পাঠকের সুবিধার্থে জিডি নাম্বারসহ হেযবুত তওহীদের বৈধতা প্রমাণপত্রগুলো এখানে দেখুন। 

কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় করতে পারেন। আমি চাই আপনারা হেযবুত তওহীদের বক্তব্য হেযবুত তওহীদের কাছেই শুনুন। কেউ আন্দাজে মনের বিষ মিশিয়ে কিছু একটা লিখে দিল, আর আপনি তার প্রতি বিশ্বাস রেখে চোখ বন্ধ করে সেগুলো গিলে ফিললেন- তেমনটা যাতে না হয়। সবার জন্য শুভকামনা।