নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

আসাদ আলীর কথোপকথন: হেযবুত তওহীদ ছাড়ো!

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১
আসাদ আলীর কথোপকথন


- ছোটভাই, তোমারে আবারও সাবধান করে দিতাছি, হেযবুত তওহীদ ছাড়ো। এইটা হইল গোমরাহ ফেরকা, বাতিল ফেরকা।

- কিন্তু কেন বড়ভাই?

- কারণ হেযবুত তওহীদ দাবি করে ১৪০০ বছর ধরে মানুষ বিকৃত ইসলাম মেনে চলতেছে। এতেই বোঝা যায় তারা কত গোমরাহ।

- না বড়ভাই, এটা ঠিক বললেন না। আমরা বলি নাই ১৪০০ বছর ধরে বিকৃত ইসলাম পালন করা হচ্ছে। আমরা বলেছি গত ১৪০০ বছর ধরে ইসলাম বিকৃত হতে হতে বর্তমানে পুরোপুরি বিকৃত হয়ে গেছে। দুইটা কি এক কথা হইল?

- ওই তো একই কথা।

- ও আচ্ছা।

- ও আচ্ছা বইলা বাঁচতে পারবা না ছোট ভাই। কী অদ্ভূত সব কথাবার্তা তোমাদের! সারা পৃথিবীতে ১৬০ কোটি মুসলমান আছে। লক্ষ লক্ষ আলেম আছে। মুফতি আছে। মুহাদ্দিস আছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন আছে। আল্লামা আছে। কেউ প্রকৃত ইসলাম বুঝল না, আর তোমাদের কোথাকার কোন ইমাম সঠিক ইসলাম বুঝে ফেলল? এইটা কোনো কথা?

- জ্বি বড়ভাই, এইটাই আসল কথা। আপনার হয়ত মানতে একটু কষ্ট হচ্ছে। কী আর বলব, আপনার মতই অবস্থা হয়েছিল ১৪০০ বছর আগের আরবদের। রসুল (সা.) যখন তায়েফে তওহীদের ডাক নিয়ে গিয়েছিলেন, তখন তায়েফের সর্দাররা রসুলকে বলেছিল- “এত মানুষ থাকতে আল্লাহ তোমাকেই বেছে নিল? তোমাকে ছাড়া আর কাউকে পাইল না?” বড়ভাই, বিশ্বাস করেন, আল্লাহ যদি হেদায়ার জ্ঞান দিয়ে অন্য কাউকে পাঠাতেন, তার ব্যাপারেও ওরা একই যুক্তি দিত!

- পাকা পাকা কথা ভালোই শিখছো ছোটভাই, কিন্তু এসব মন ভুলানো যুক্তি দিয়া আমারে ভুলাইতে পারবা বলে মনে হচ্ছে না।

- বড় ভাই, আপনারে কিছু বুঝানোর দরকার নাই আমার। আপনিই বরং আমারে বুঝান। বুঝাবেন? 

- হা হা হা! জানতাম তো, ফেল মারবা। তো বলো, কী বুঝাইতে হবে তোমারে? 

- আপনি দাবি করেন ইসলাম বিকৃত হয় নাই, ইসলাম সঠিকই আছে। তাই তো? 

- অবশ্যই তাই। 

- তাই যদি হয়, তাইলে আপনি নির্দিষ্ট একটা দল করেন কেন? 

- মানে? 

- মানে তো পরিষ্কার। দেখেন, আপনি নিজেও জানেন ইসলামে দলাদলি হারাম। আল্লাহ মো’মেনদেরকে সীসাঢালা প্রাচীরের মত ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। তো, আপনি ঐক্যবদ্ধ থাকার বদলে মু’মিনদের মধ্যে দলাদলি শুরু করলেন কেন?

- আরে ভাই, আমি তো ইসলামী দলই করি। সেকুলার দল তো করি না।

- আপনি যেই দলই করুন, একটা দলই তো করেন। তার মানে ওই দলের বাইরে যত কোটি কোটি মুসলমান আছে, তাদের থেকে আপনি কি পৃথক হয়ে গেলেন না? ইসলামে তো এই ভাগাভাগি, দলাদলি হারাম। 

- দ্যাখো ছোটভাই, তুমি কিন্তু আবার কথার প্যাঁচ মারতেছো। দল করার সাথে ইসলাম বিকৃত হওয়ার সম্পর্ক কী? 

- অনেক সম্পর্ক আছে বড় ভাই। যদি ইসলাম থাকে, তাহলে সেখানে দলাদলি হতেই পারে না। কারণ মো’মেনদের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকা ফরজ, জামায়াতবদ্ধ থাকা ফরজ। আপনাদের দাবি যদি সঠিক হয় অর্থাৎ পৃথিবীতে সঠিক ইসলাম থাকে এবং ১৬০ কোটি মুসলমান সঠিক ইসলামের অনুসারী হয়, তাইলে কোনো দলের জন্মই হইতে পারত না। সবাই মিলে হইত অখণ্ড জাতি। তাদের একজন ইমাম থাকত। কিন্তু এখন তো বিপরীত চিত্র। দলাদলি আর ফেরকাবাজিতে ভরে গেছে আমাদের সমাজ। আপনি নিজেও একটা দল করেন। কেন করেন? 

- তুমি কেন করো? তুমিও তো হেযবুত তওহীদ করো। 

- আমি তো করবই। কারণ, আমি বিশ্বাস করি দুনিয়াতে প্রকৃত ইসলাম নাই, কেউ প্রকৃত ইসলামে নাই। সেজন্যই তো আমরা হেযবুত তওহীদ করেছি। আমরা চাচ্ছি সবাই বিকৃত ইসলাম বাদ দিয়ে প্রকৃত ইসলামে আসুক। ঐক্যবদ্ধ হোক। একজন নেতার (ইমামের) অধীনে আসুক।

কিন্তু আপনারা কী করছেন? আপনারা একদিকে বলছেন দেশের নব্বই পার্সেন্ট মানুষ মুসলমান, আরেকদিকে নব্বই পার্সেন্টের মধ্যে ১% বা ২% মুসলমান নিয়ে আলাদা হয়ে যাচ্ছেন অন্যদের থেকে। কেন এমন করেন? যদি সবাই মুসলমান হয় তাইলে তো সবাই মিলে একদল হবেন, মাত্র ২% নিয়ে কেটে পড়াটা ভুল। আর যদি আপনারা ২% সঠিক ইসলামে থাকেন, বাকিরা সঠিক না হয়, তাইলে ৯০% মানুষকে মুসলমান বলে দাবি করাটা ভুল। তাই না? 

- ছোটভাই, তুমি এখন যাও। 

- কেন বড়ভাই?

- তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করতেছে না।

- জ্বি আচ্ছা বড়ভাই, আবার ইচ্ছা হলে ডাক দিবেন। আমার আরও অনেক কিছু বলার আছে। জানার আছে।

- যা ভাই, প্লিজ! তর হাতে পায়ে ধরি।