সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ও বিদ্বেষ মানবজাতির পুরোনো সঙ্কট। আল্লাহর রসুল এই সঙ্কটের যুগান্তকারী সমাধান করেছিলেন। মদীনায় হিজরতের পর আল্লাহর রসুল মদীনার ইহুদি, পৌত্তলিক ও মুসলিম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন যা ইতিহাসে মদীনা সনদ নামে খ্যাত।
আন্তঃধর্মীয় বিভাজন ও ঘৃণা-বিদ্বেষের বিপরীতে রসুলাল্লাহ গড়ে তুলেছিলেন আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, আস্থা, বিশ্বাস ও সহনশীলতার সম্পর্ক।
এছাড়া রসুলাল্লাহ তাঁর হাতে গড়া জাতিকে এমন আকিদা শিক্ষা দিয়েছিলেন যে, সেই জাতি উদারতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সহনশীলতার মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিল। তারা ছিলেন সার্বজনীন মানসিকতার ধারক। এই মানসিকতা তৈরি করেছিল ইসলাম।
কোর’আনে বারবার মানুষের আদি পিতা-মাতা ও আদি অবস্থার কথা স্মরণ করানো হয়েছে। যেমন, সুরা নিসার প্রথম আয়াতেই আল্লাহ বলেছেন, “হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। যিনি তোমাদের একই ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তা থেকে তার সহধর্মিনী সৃষ্টি করেছেন। যিনি তাদের দু'জন থেকে পৃথিবীতে বহু নর-নারী বিস্তার করেছেন।” খেয়াল করুন, আয়াতের কথাগুলো আল্লাহ কাদেরকে বলেছেন। শুধু মো’মেনদেরকে নয়, মুসলিমদেরকে নয়, রসুলকেও নয়, বলেছেন পুরো মানবজাতিকে।
তিনি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন তোমরা নিজেদের মধ্যে যত বিভাজনের দেয়াল তুলে রাখো না কেন, আমার দৃষ্টিতে তোমরা সবাই এক পিতা মাতার সন্তান। তোমরা সবাই ভাই।
এছাড়াও বাকারার ৬২ নম্বর আয়াতসহ বহু আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেও ঈমানদার ব্যক্তি রয়েছেন।
এই সার্বজনীন চেতনায় উজ্জীবিত ছিল উম্মতে মোহাম্মদ জাতি। কাজেই সেই জাতিটি যখন অর্ধপৃথিবীর শাসকে পরিণত হয়েছিল তাদের অধীনে বিভিন্ন ধর্মের, মতের, বিশ্বাসের মানুষ যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্মীয় উপাসনা, অনুষ্ঠান ইত্যাদি সম্পাদন করতেন। কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা কল্পনাও করা যেত না।
মন্তব্য করুন এখানে