নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

নিজে ভালো তো জগৎ ভালো

প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২১

আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত এবং গৃহীত  একটা মতবাদ, "নিজে ভালো তো জগত ভালো । "

এই মতবাদ কত যে  ভয়ংকর তা চিন্তা করার  সময় অনেক আগেই হয়েছে । 

নিজে ভালো তো জগৎ ভালো
এটা এমন একটা মতবাদ যেটা দিয়ে ধার্মিক(?) সাজা খুবই সহজ । কারণ বর্তমানে ধার্মিক মানে চোখ, কান বুঝে  সমাজের অন্যায়  দেখেও না দেখার ভান করে  মাথা নিচু করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, তাসবিহ তাহলীল করা । অন্যায় দূর করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য  কোন চেষ্টা প্রচেষ্টার দরকার হয় না , দরকার হয় না কারো সাথে দ্বন্দ্বে জড়ানোর । ফলে অন্যায়কারীদের  কাছে এই সমস্ত লোক খুবই পছন্দের, সম্মানের । 

বর্তমান সমাজে যারা শিক্ষিত তারা সাতেও নাই পাঁচেও নাই ।  একটা চাকরী নিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মকর্ম পালন করে  সারাটা জীবন পার করে দিতে পারলেই সাফল্য । ফলে সমাজের ধূর্ত, অশিক্ষিত, অর্ধ-শিক্ষিত লোকগুলো নেতৃত্বের আসনে আসীন । সমাজ, রাষ্ট্র, জাতির  কল্যাণের বদলে  নিজের কল্যাণই তাদের মূখ্য বিষয় । 

মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ মানব রাহমাতাল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ  (সা)  আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ । "নিজে ভালো তো জগৎ ভালো " এই মতবাদ যদি সঠিকই হতো  তাহলে রাসূলাল্লাহর মতো আল-আমীন, আস-সাদেক, সমাজের সবচেয়ে ভাল মানুষ যার সম্পর্কে শত্রুরাও মিথ্যাচার করতে পারে না তাঁকে কেন সবার কাছে খারাপ হতে  হলো ? 

কী দরকার ছিল নিজের অবস্থানকে সংকটপূর্ণ করার? 

আজ আমরা নিজেদের উম্মতে মোহাম্মদী দাবী করে তাঁর শিক্ষার বিপরীত স্রোতে ভাসছি ।  

ষড়যন্ত্রমূলক শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের এমন এক শিক্ষা দেয়া হয়েছে  যার ফলে  যে যতো শিক্ষিত সে ততো ঘরকুনো, স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক  ।  সমাজে  আবহমান কাল থেকে  সাধারণ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় সম্পর্কেও  সাধারণ মানুষের নূন্যতম জানাশোনা নাই, জানার আগ্রহও নাই  এবং

এর পেছনে কারা দায়ী তা বুঝানোর জন্য একটা ঘটনা উল্লেখ করছি । 

সময়টা ২০১২, আমি দশম শ্রেণীর ছাত্র ।  মসজিদে 

ইমামের অনুপস্থিতিতে  সবাই মিলে আমাকে দায়িত্ব দিলে আমি মাগরীবের সালাহ করালাম। 

সালাহ শেষ করে মোনাজাত না করেই উঠে দাঁড়ানোয় পেছন থেকে সবাই হৈ দিয়া উঠলো। বললো , হাদী , মোনাজাত করাইলা না?

আমি শান্ত স্বরে বললাম, নামাজই দোয়া, এরপরও কেউ যদি মোনাজাত করতে চান আলাদাভাবে করতে পারেন। মোনাজাত নামাজের অংশ না,  আমাকে জোর করবেন না। 

এই কথায় অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন ,বড় বড় মওলানারা দোয়া করায় তুমি সেদিনের পোলা। তুমি কী বুঝো? 

শুক্রবার আহুক মওলানার কাছে বিচার দিমু।

আমি একটু ভরকে গেলাম। 

সালাহ শেষে গেলাম মওলানা দাদার কাছে। খুলে বললাম সব ঘটনা। দাদা বললেন

মোনাজাত নামাজের অংশ না ঠিক আছে কিন্তু এটা বললে মানুষ মানবে না, ফেৎনা হবে তাই তারা যেভাবে চায় সেভাবেই বুঝা দেয়া লাগে । 

আমি বললাম,দাদা আপনারা বললে তো সমস্যা নাই। 

দাদা বললেন, বুঝবা না দাদু আরো বড় হও। 

দাদার  কথায় ঐ পর্যন্তই ছিলাম । 

আমাদের সমাজ এভাবে কতশত বিষয় যে ভুলভাবে চলছে তা চিন্তাশীলরাই অনুধাবন করতে পারে অন্যরা নয়। 

এভাবে শিক্ষিতরা নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখে, জ্ঞানীরা নিরবতা পালন করে আর এই সুযোগে মূর্খরা কর্তৃত্ব খাটায় । 

এর ফলে সমাজে সৃষ্ট অন্যায় অশান্তি থেকে কেউ  নিরাপদ  থাকতে পারে না। 

একটা কথা আছে, "নগরে আগুন লাগলে দেবালয় এড়ায় না । "