নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

তালেবানের আফগান দখল ও আমার কিছু কথা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২১

আফগানিস্তানে যা ঘটে গেল এই যুগে সেটা প্রায় অসম্ভব কাজ। আর সেই অসম্ভব কাজটাই হয়ে গেছে। কিন্তু এত সহজে একটা আমেরিকা-ভারত ব্যাকড একটা রাষ্ট্র তাসের ঘরের মতো ধ্বসে পড়ার ঘটনাটা মোটেও স্বাভাবিক নয়। নিশ্চয় এর পেছনে বড় কিছু কাজ করেছে। তালেবান আমেরিকার পাশাপাশি চীন ও রাশিয়ার সাথে কোনো একটা সমঝোতায় এসেছে। কি সেই সমঝোতা সেটা এখন পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। সমঝোতার শর্তসমূহ রহস্যময়ই থেকে গেল। 

তবে ২০০১ সালে পতন হওয়া তৎকালীন তালেবান আর বর্তমানের তালেবানদের মাঝে যে বিস্তর পার্থক্য আছে সেটা অতি পরিষ্কার। তালেবান আর মোটেও উম্মাহকেন্দ্রিক আদর্শে নাই। অন্তত তাদের মৌখিক তথ্য সেটা বলে না। অর্থাৎ তারা আগের মতো আর বিপ্লব রপ্তানি করবে না। তারা জাতীয়তাবাদী আদর্শে ঢুকে গেছে। যে লাদেনকে আশ্রয় দিতে গিয়ে, লাদেন তাদের মেহমান বলে স্বীকৃতি দিয়ে লাদেনকে সূরক্ষার জন্য আমেরিকার হামলাকেও তারা তোয়াক্কা করেনি, সেই তালেবান এখন বলছে তাদের মাটি অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে দেওয়া হবে না। স্বাভাবিকভাবেই তাদের পার্শ্ববর্তী চীনের উইঘুর সম্প্রদায়ের সহযোগিতা প্রশ্নে চীনকেও তারা আশ্বস্ত করতে পেরেছে। রাশিয়াকেও নিশ্চয় কোনোভাবে তারা আশ্বস্ত করতে পেরেছে। যে কারণে খুব স্বল্প সময়ে তারা কাবুলের পতন ঘটাতে সমর্থ হলো। 

তালেবানের আফগান দখল ও আমার কিছু কথা

তালেবান বলছে তারা নারী শিক্ষার পক্ষে ও নারীদেরকে অবরুদ্ধ রাখার বিপক্ষে। কিন্তু অতীতে আফগানিস্তানকে বিপ্লবের কেন্দ্র বিবেচনা করে নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে ও নারীদের উপর বিভিন্ন রকম শর্ত আরোপের মাধ্যমেই তারা বিশ্বের বুকে বিরূপ শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। আর এসবের বিরুদ্ধে মার্কিনীদের দখলদারিত্ব বিশ্ববাসীর বুকে নায়োকোচিত বলে বিবেচিত হয়েছে। 

তালেবানরা উপরোক্ত বিষয়গুলো ত্যাগ করার পাশাপাশি জোর করে দাড়ি টুপি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি ত্যাগ করার পর আর অন্য আট দশটা জাতীয়তাবাদী শক্তির মতো শক্তি হিসেবে দেশ শাসন করলে সম্ভবত পরাশক্তিগুলোর কোনো আপত্তির কিছু নেই। যে কারণে তারা তাদের গ্রিন সিগনালে দ্রুতই আফগানিস্তানকে কবজা করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তালেবানকে আপাতত কিছুটা উদার মনে হচ্ছে। সম্ভবত এসব সংশোধন হয়ে আসাই পরাশক্তিগুলোর সাথে তালেবানের চুক্তির শর্ত ছিল।

তালেবান এখন ভারত ও আমেরিকার গত বিশ বছরের প্রচেষ্টায় অনেকটা সুসংহত রাষ্ট্রব্যবস্থাই পেয়েছে। এখন তারা চাইলে সুন্দর করে দেশ শাসন করতে পারে। কিন্তু তারা যদি এসব শর্ত লংঘন করে পূর্বের ন্যায় উগ্রতার পথ ধরে তবে শুধু তালেবানই নয়, গোটা আফগানিস্তান আবারও অশান্তির দাবানলে পুড়তে পারে। বহুকাল যাবত অশান্তির আগুনে পোড়া আফগানিস্তানের মানুষ কি একটু শান্তির পরশ পাবে কি না সেটাই এখন প্রত্যক্ষ করার বিষয়।