নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

তারা কি আদৌ রসুলাল্লাহর অনুসারী?

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২১
মসজিদে প্রশ্রাবকারী ব্যক্তির প্রতি আচরণ

ইসলামের নাম ব্যবহার করে যারা এই প্রতিনিয়ত হিংসা ও সন্ত্রাসের চর্চা করে চলছে- তারা কি আদৌ রসুলাল্লাহর অনুসারী? যারা রসুলকে ভালোবাসেন, ইসলামকে ভালোবাসেন তাদের সামনে মহানবীর গৃহীত কর্মনীতি আলোচনা করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। 

ঘটনা ১।। মসজিদে প্রশ্রাবকারী ব্যক্তির প্রতি আচরণ

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, একবার এক বেদুঈন মসজিদে নববীতে পেশাব করে দিল। লোকেরা তা দেখে তেড়ে এল। কিন্তু রসুলাল্লাহ (সা.) তাদেরকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, তাকে তার কাজ শেষ করতে দাও এবং এক বালতি পানি ঢেলে স্থানটি ধুয়ে দাও। মনে রেখ, তোমাদেরকে পাঠানো হয়েছে জীবনকে সহজ করার জন্য, কঠিন করার জন্য নয় (হাদিস- বোখারি, কিতাবুল ওজু ১/৩৫)।

এরপর রসুলাল্লাহ লোকটিকে শান্তভাবে বুঝিয়ে বললেন যে মসজিদ আল্লাহর ঘর, এখানে সালাহ কায়েম করা হয়। এটা পবিত্র স্থান। এখানে এই কাজ করা উচিত নয়। আরববাসীর অজ্ঞতা সম্পর্কে রসুলাল্লাহ সচেতন ছিলেন। তাই এ বিষয় নিয়ে অন্যান্য সাহাবিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়াতে দিলেন না। তিনি সঙ্গে সঙ্গে হস্তক্ষেপ করে সুন্দর ও স্বাভাবিক সমাধান করে দিলেন। 

পক্ষান্তরে আজকে যদি এ ধরনের ঘটনা কেউ ঘটায় তাহলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এর সমাধান দেওয়ার আগেই স্বার্থান্বেষী ঐ গোষ্ঠীটি গুজব ছড়িয়ে দিত। ফলে তার কপালে কী ঘটবে তা সহজেই অনুমেয়। 

প্রমাণ- মাত্র কিছুদিন আগে লালমণিরহাটে জুয়েল নামে একজন নির্দোষ ব্যক্তির উপর কোর’আন অবমাননার অভিযোগ এনে শেষ পর্যন্ত তাকে পিটিয়ে হত্যা তো করাই হয়েছিল, তারপর তার মরদেহ আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল পাশবিক উল্লাসে। কিন্তু বেচারার দোষ ছিল এটাই যে, মসজিদের উঁচু তাক থেকে কোর’আন নামাতে গিয়ে একটি কোর’আন মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। বেচারা হাজার বার কোর’আনে চুমু খেয়েও, পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও রক্তপিপাসু উন্মাদদের হাত থেকে বাঁচতে পারল না। 

এই মানুষগুলো আসলেই কি সেই নবীর অনুসারী যিনি অজ্ঞ বেদুইনকে মসজিদের ভিতরে অমন কাজ করতে দেখেও বিন্দুমাত্র ক্ষিপ্ত হন নি? তারা কি আসলেই মহানবীর আদর্শ ধারণ করেছেন? রসুলাল্লাহ তো জেহাদ করেছেন সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য, এবং সেই জেহাদের একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কর্মসূচি ছিল। তাঁর জেহাদ ছিল বহুগুণ শক্তিশালী শক্তির বিরুদ্ধে। তিনি তো দুর্বল অসহায় মানুষের বিরুদ্ধে শক্তিপ্রদর্শন করেন নি।